Tuesday, 11 October 2022
ছাদ
একটা সময় রোজ ছাদে উঠতাম। নিজের বাড়ি ছেড়েই দিলাম, লোকজনের বাড়ি গিয়েও ছাদটা একবার দেখা আমার জন্যে মাস্ট ছিল। সেসব বহু বছর হল চুকে গেছে। বাড়ির ছাদে আমরা দল বেঁধে উঠতাম আড্ডা মারতে, গান শুনতে, গলা ছেড়ে গান গাইতে, আবার মাঝে মাঝে কিছুই না করতে। মা আর দাদুকে পাত্তা দিতাম না। বাবা ডাকলে তবে নিচে নামতাম। ২০১২-র জানুয়ারি থেকে বাড়িতে ঢোকাই বন্ধ করে দিয়েছিলাম প্রায়। দাদুর জন্যে আসতাম শুধু। তারপরে সে পাটও চুকে গেল ওই বছরেই। তারপরে অনেকগুলো বছর বাড়ির একতলা অব্দিই সীমাবদ্ধ ছিল আমার যাতায়াত। রাগ, দুঃখ অনেককিছু একসাথে... আসতে আসতে বুঝতে পারলাম বাড়িটারও কষ্ট হয়। বাড়িটা যেভাবে খালি হয়ে গেছে, বুঝতে পারি ওরও একটা মন আছে বোধহয়। সেই দাদুর বাবার সময় থেকে কত মানুষ বাড়িটাকে আঁকড়ে ছিল, তারপরে দুম করে গত দশ বছরে জমজমাট বাড়িটা একদম খালি হয়ে গেল। আর এটা তো শুধু বাড়ি নয়... উল্টোদিকের বাড়িটা ছিল দাদুর ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সময়ের মেসবাড়ি। অতএব এই বাড়িটার প্রতি, এই এইটুকু চত্বরটার প্রতি একটা অমোঘ টান আছে আমার। একটা মায়া। বাংলাদেশে দাদুর স্কুলে গিয়ে, আমাদের গ্রামে গিয়েও এরকম একটা অদ্ভূত অনুভূতি হয়েছিল। দাদু কোনদিন বলেনি বাড়ি ছেড়ে আসার কষ্টের কথা, কিন্তু এখন আমি দাদুকে খানিকটা হলেও বুঝি। আজকে অনেক বছর পরে ছাদে উঠেছিলাম। এত অক্সিজেন আর কোথাও নেই!
Subscribe to:
Posts (Atom)